ধর্ষণের অভিযোগ গ্রহণযোগ্য নয়, প্রেম ভেঙে যাওয়ার পর

প্রেম ভেঙে যাওয়ার পর ধর্ষণের অভিযোগ গ্রহণযোগ্য নয়
              প্রেম ভেঙে যাওয়ার পর প্রেমিকা যদি প্রেমিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন, তবে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। শুক্রবার ভারতের বোম্বে হাইকোর্টের এক বিচারপতি এমন রায় দিয়েছেন।খবর  টাইমস অব ইন্ডিয়া।

খবরে বলা হয়, ধর্ষণের অভিযোগে সাজা পাওয়া ও বোরিভালি নিবাসী মানেশ কোটিয়ানের (৩৭) আপিলের মামলার রায়ে হাইকোর্টের বিচারপতি সাধনা যাদব এ রায় দেন।

মানেশের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটিকে ভিত্তিহীন উল্লেখ করে বিচারপতি যাদব বলেন, ‘মামলার জেরায় এটি প্রমাণিত হয়েছে এবং বাদী স্বীকার করেছেন যে, তাঁর সঙ্গে মানেশ কোটিয়ানের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এবং তিনি (বাদী) মানেশকে বিয়েও করতে চেয়েছিলেন। এ অবস্থায় ভারতীয় প্যানেল কোডের (ধর্ষণ) ৩৭৬ ধারায় দায়ের করা অভিযোগ অগ্রহণযোগ্য।’

আদালত জানান, অভিযুক্তের অপরাধ হলো, তিনি ওই নারীকে (যৌনকর্মের) প্রস্তাব দিয়েছেন। বিচারক বলেন, ‘অভিযোগকারী একজন শিক্ষিত ও বয়োপ্রাপ্ত নারী। সে (মানেশ) কী কারণে তাঁর প্রতি অনুরক্ত হয়েছে, তা তিনি ঠিক ঠিক বুঝতে পেরেছেন। এর পরও তিনি তাঁর সঙ্গে গোরাই এলাকায় ঘুরতে যেতে সম্মত হন। তাঁর (মানেশের) জন্মদিন পালনের জন্য তিনি তাঁর সঙ্গে একটি হোটেলেও ওঠেন। এরপর যা হয়েছে, সে ব্যাপারেও তিনি পুরোপুরি সজাগ ছিলেন।’

বিচারপতি আরও বলেন, ‘ওই সময়ে তিনি কারও সাহায্য চেয়ে চিত্কার করেননি এবং সেটির (মানেশের আচরণের) বিরুদ্ধে কোনো প্রতিরোধ গড়ারও চেষ্টা করেননি। তা ছাড়া, ঘটনার বর্ণনায় এটাও প্রমাণিত হয়নি যে, কোনো ধরনের ভীতি প্রদর্শন, ওষুধ খাইয়ে সম্মোহিত করে, জোরপূর্বক বাধ্য করে বা অন্য কোনোভাবে প্রভাবিত করে বাদীকে এতে (যৌনকর্মে) যুক্ত করা হয়েছে।’

তবে হাইকোর্ট মানেশের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগকে সঠিক বলে রায় দিয়েছেন। এর আগে নিম্ন আদালত মানেশকে যেসব অভিযোগে সাত বছর শাস্তি দিয়েছিলেন, সেগুলোর অন্যতম ছিল প্রতারণা।

আদালত আজ জানান, মানেশ ওই নারীকে জানাননি যে তিনি বিবাহিত ও তাঁর সন্তানাদি আছে। তাই তিনি প্রতারণা করেছেন। তাই তিন বছর আগে থেকে কারাভোগ করা মানেশের সাজা কমিয়ে তিন বছর করে দেন আদালত এবং তাঁকে মুক্তির নির্দেশ দেন।

মানেশ কোটিয়ানের পক্ষে হাইকোর্টের আইনগত সহায়তা কেন্দ্রের আইনজীবী আরফান সাইদ বলেন, ‘বিবাদী যে বাদীকে জোর বা ধর্ষণ করেছেন, এমন কোনো প্রমাণ নেই। সে (মানেশ) সব সময়ই তাকে বিয়ে করতে চাইত এবং সে তাকে এটিও জানিয়েছিল যে, আগের বউকে তালাক দিয়ে পরে বিয়েতে বসবে।’

এ মামলার শুরু ২০১০ সালের মার্চে। সে সময় বাদী চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তিনি মানেশের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। বোরিভলির একটি স্টেশনারি দোকানে কাজ করার সময় তাঁদের পরিচয়। ২০০৯ সালের নভেম্বরে মানেশের জন্মদিন উদযাপনের জন্য তাঁরা দুজনে গোরাই যান। সে সময় মানেশ ওই নারীর সঙ্গে জোর করে সঙ্গম করেছেন বলে দাবি করেছিলেন মামলার বাদী।

২০১২ সালে একটি সেশন আদালত মানেশকে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত করেন এবং তাঁকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। এরপর মানেশ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন।
Share this post :

Post a Comment

Blog Archive

 
Support : Creating Website | N Hassan | Winter Hassan
Copyright © 2013. BD World 21 - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Online World