বাংলাদেশে আশংকাজনক হারে হিজাব পরিহিতার সংখ্যার বেড়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে এই প্রসঙ্গে গভীর উদ্বেগের কথা জানিয়েছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। গতকাল রাজধানীর শাহবাগে এক মৌন মিছিল শেষে জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিয়ে এক সংক্ষিপ্ত সভায় বক্তারা এই উদ্বেগের কথা জানান।
“বাড়ছে হিজাবী মেয়ের সংখ্যা, হুমকির মুখে বাআঁলি সংস্কৃতি” শীর্ষক এই কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে বক্তারা আশংকা প্রকাশ করেন, এভাবে হিজাবের প্রকোপ বাড়তে থাকলে এক সময়ে বাআঁলি সংস্কৃতির ছিটাফোটাও এই দেশে আর অবশিষ্ট থাকবে না।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও বিশিষ্ট সংস্কৃতি ব্যাক্তিত্ব ড. সানজিদা খাতুন বলেন, ‘বাআঁলি মেয়ে কেন হিজাব পরবে? আবহমান বাংলার যে সংস্কৃতি আমাদের রক্তে আমাদের ধমনীতে বহমান, সেখানে তো হিজাবের কোন স্থান নেই। তাহলে কেন আজ চারদিকে এত হিজাব?’
তিনি আরও বলেন, ‘বাআঁলি মেয়ে মানে হচ্ছে খোলামেলা, স্বাধীনচেতা, যা খুশি করা। সেখানে এই ঢেকেঢুকে চলা কেন?’
সংগঠনের নেতা, প্রথম মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় সারির ও দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সারির যোদ্ধা নাসিরুদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, ‘আগে তো কখনও দেখি এত হিজাব। তাহলে এখন কেন? কী এমন হল দেশে যে সবাইকে লাইন ধরে হিজাব পরতে হবে?’
তিনি যোগ করেন, ‘এই যে আমার ভোগ্য লাকি আক্তার, ও কি হিজাব পরে? তারপর সুঠাম দেহের সুপুরুষ পুলিশদের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে তাদেরকে ফুল বিলোনো জিনাত জোয়ার্দার রিপা, ও কি হিজাব পরে? ওরা হচ্ছে প্রকৃত বাআঁলি মেয়ে। ওরা হিজাব পরে না, তো বাকিরা পরছে কেন?’
সংগঠনের অপর সদস্য ও সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব খুশি কবির বলেন, ‘বাআঁলি মেয়েরা হচ্ছে ইনোভেটিভ, এন্ট্রাপ্রেনুয়াল, উদ্যোগী। এই যে আমাদের রিপা, কি বুদ্ধিমতি মেয়ে! বুদ্ধি করে একুশে ফেব্রুয়ারির রাতে শহীদ মিনারের সব ফেলে দেয়া ফুল বাড়িতে এনে জড়ো করেছিল। আজ কি সুন্দর একটু একটু করে সেই ফুলগুলো সুঠাম পেটানো শরীরের সুপুরুষ পুলিশগুলোর সাথে গায়ে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে তাদেরকে বিলিয়ে যাচ্ছে। উফ! কি মজা! তো এখানে হিজাব টিজাব আসে কোত্থেকে?’
সংগঠনের অপর অন্যতম সদস্য ও বিশিষ্ট সংস্কৃতি ব্যাক্তিত্ব শাহরিয়ার কবির কিছুটা বিলম্বে উপস্থিত হয়ে বলেন, ‘মাফ করবেন আমার আসতে কিছুটা দেরি হয়ে গেছে। গত রাতে এই হতচ্ছাড়া জামাত শিবির হেফাজতের মৌলবাদী কিছু ছেলে আমার মুরগির খামারের সব পানি ফেলে দিয়ে সেগুলোয় দেশি মদ ভরে রেখে গিয়েছিল। আজ সকালে উঠে গিয়ে দেখি কী অবস্থা! মদ পেটে গিয়ে মুরগি গুলো যা না তা করছে! সে যাকগে, হিজাব আমাদের একটি চলমান সমস্যা এবং আমাদের এটা নিয়ে ভাবতে হবে। পথেঘাটে এমনকি বিয়েশাদিতে এখন গিয়ে দেখি দলে দলে ছোট মাঝারি বড় মেয়েরা, এমনকি তাদের মায়েরা পর্যন্ত হিজাব লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। লজ্জায় মুখ দেখাতে পারি না’।
তিনি আরও বলেন, ‘জায়গায় জায়গায় দেখি নামাজের স্থান। সব অফিসগুলোয় কই রবীন্দ্র সংগীত চলবে, তা না করে হতচ্ছাড়া নামাজের ঘর বরাদ্দ করছে! দলে দলে নামাজ পড়ছে! কী হরিবল! তো আমাদেরকে এই অপসংস্কৃতি নিয়ে ভাবতে হবে’।
কর্মসূচীতে আরও উপস্থিত ছিলেন ড. আনিসুজ্জামান, ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণী, কামেন্দু মজুমদার, ফাপর ইকবাল, সংগীত শিল্পী প্রিতম, গঞ্জিকাসেবন পূর্বক সাক্ষাতকার খ্যাত শিল্পী মেসবাহ আহমেদ ও তার বিশু দা প্রমুখ।
সূত্রঃ দৈনিক কানাকানি
Related Topics: bangla news, face, head, islam, islamic, life style, news, ইসলামী, চুল, ফযীলত, সংবাদ, হিজাব
+ comments + 1 comments
vai eta ki cagu mane....... jamati na hefajoti dara poricalito ???
Post a Comment