দুই বোন যাঁকে কাকু বলে ডাকে

দুই বোন যাঁকে কাকু বলে ডাকে

রোজকার মতোই পাড়ার কলে জল ভরতে গিয়েছিল দুই বোন৷ এলাকারই এক যুবক (যাঁকে কাকু বলে ডাকে দুই বোন) সেখানেই এসে বিয়ের প্রস্তাব দেয় ছোট বোনকে৷ কিশোরী আপত্তি জানাতেই হাঁসুয়ার কোপ বসিয়ে দেয় ওই যুবক৷ বাঁচাতে এসে জখম হন কিশোরীর দিদিও৷ এর পর সটান থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে সেই ‘গুণধর’৷ পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে৷ অন্ডাল থানার কুটিরডাঙা গ্রামের ঘটনা৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই কিশোরীকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷
রবিবার সন্ধেয় মাম্পি ওরফে পম্পা বাউড়ি (১৪) টাইম কলে জল ভরতে যায়৷ সঙ্গে ছিল তার দিদি অমৃতা বাউড়িও৷ সেই সময় জিতেন কোরা (২৫) নামে পাড়ারই এক যুবক সেখানে হাজির হয়৷ পম্পাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় সে৷ জিতেন নামে ওই যুবককে ‘কাকু’ বলে ডাকে পম্পা ও অমৃতা৷ সেই প্রসঙ্গ তুলেই পম্পা জিতেনকে জানিয়ে দেয়, সে বিয়ে করতে রাজি নয়৷ প্রত্যাখ্যাত হতেই খেপে গিয়ে পম্পার চুলের মুঠি ধরে টেনে নিয়ে যায় জিতেন৷ এর পর কাটারির কোপ বসিয়ে দেয় পম্পার মাথায়৷ বোনকে বাঁচাতে এসে জখম হয় অমৃতাও৷ তার হাতে ও পায়ে চোট লাগে৷ কিন্তু তাতেও রাগ পড়েনি জিতেনের৷ পম্পার ওপর এলোপাথাড়ি কাটারি চালাতে থাকে সে৷ পম্পা অচৈতন্য হয়ে পড়ে৷ তবে জিতেন ভেবেছিল, সে মারা গিয়েছে৷
তাই সেখান থেকে সে সোজা গিয়ে হাজির হয় অন্ডাল থানায়৷ পুলিশকে জানায়, খুন করেছে সে৷ সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে৷ অন্ডাল থানার ওসি তাপস পাল বলেন, ‘আমি সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই৷ প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারী অফিসাররা৷’ পুলিশই দুই বোনকে উদ্ধার করে৷ দু’জনকেই দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ অমৃতার আঘাত গুরুতর না হলেও, হাসপাতাল সূত্রে খবর, পম্পার অবস্থা আশঙ্কাজনক৷
দুই বোন পুলিশের কাছে জিতেনের বিরুদ্ধে বয়ান দিয়েছে৷ তারা জানিয়েছে, এর আগেও জিতেন পম্পাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল৷ পম্পার বাবা-মা আপত্তি তোলায়, জিতে তাঁদের মারধর করে বলে জানিয়েছে পম্পা ও অমৃতা৷ দুই বোনের দাবি, পরিবারের তরফ থেকে পুলিশের কাছে অভিযোগও করা হয়েছিল৷ কিন্তু লাভ হয়নি৷ উল্টে জিতেন তাদের বারবার হুমকি দিচ্ছিল, যাতে মামলা বেশি দূর না গড়ায়৷ অমৃতা এ দিন বলে, ‘দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি, এমন ঘটনা কোনও দিন ঘটবে৷ বোন বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায়, ওকে মেরে ফেলতে চাইছিল জিতেন৷’

অন্ডাল থানার ওসি তাপস পাল বলেন, ‘এর আগে পম্পার বাবা-মারে মারধরের যে অভিযোগ জিতেনের বিরুদ্ধে এনেছে দুই বোন, তা আমার জানা নেই৷ তবে এ বার যাতে জিতেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়, পুলিশ তা দেখছে৷’