সাজানো নাটক ছিল রেশমাকে উদ্ধার!!!


           ঢাকার সাভারের রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে ১৭ দিন পর পোশাককর্মী রেশমা বেগমকে উদ্ধারের ঘটনাটি ছিল সাজানো নাটক। আজ রোববার প্রকাশিত যুক্তরাজ্যের ট্যাবলয়েড মিরর-এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
নয়তলা ভবন রানা প্লাজা ধসে পড়ে গত ২৪ এপ্রিল। এ ঘটনায় নিহত হন এক হাজার ১৩১ জন। এখনো নিখোঁজ আছেন কয়েক শ মানুষ। ভবনটি ধসে পড়ার ১৭ দিন পর ১০ মে ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয় রেশমাকে। এ ঘটনা সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
সম্প্রতি আমার দেশ পত্রিকার অনলাইনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, রেশমাকে উদ্ধারের ঘটনা সরকারের সাজানো নাটক ছিল।
সাইমন রাইটের লেখা মিরর-এর এই প্রতিবেদনে বলা হয়, রানা প্লাজার তৃতীয় তলায় রেশমার সঙ্গে কাজ করতেন এমন একজন পুরুষ কর্মী জানিয়েছেন ভবন ধসে পড়ার পর ওই দিনই তিনি এবং রেশমা একসঙ্গে ধ্বংসস্তূপ থেকে বেরিয়ে আসেন। ওই সহকর্মী বলেন, ‘আমরা দুজন একসঙ্গেই হেঁটে ধ্বংসস্তূপ থেকে বেরিয়ে আসি। এরপর দুদিন একই হাসপাতালে চিকত্সাধীন ছিলাম। এরপর তিনি (রেশমা) উধাও হয়ে যান। ১৭ দিন পর তাঁকে দেখলাম টেলিভিশনে। তারা এটাকে অলৌকিক ঘটনা বলে জানাল। কিন্তু এটা ছিল ধোঁকাবাজি।’
উদ্ধারের ঘটনাটি সাজানো নাটক। নানা দিক থেকে সমালোচনার শিকার হয়ে সরকার নিজেদের ভাবমূর্তি উদ্ধারে এই নাটক সাজিয়েছে—সরকারবিরোধীদের এমন প্রচারণার বিষয়টি যাচাইয়ের জন্য মিরর-এর সাংবাদিক বাংলাদেশে আসেন বলে পত্রিকাটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, তাঁরা ঘটনার শিকার শ্রমিক এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য রেকর্ড করেছেন। রেশমার সঙ্গে উদ্ধার হওয়া ওই পুরুষ সহকর্মীর নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না, তিনি প্রতিহিংসার শিকার হতে পারেন। এই ভয়ে তিনি ইতিমধ্যে গা-ঢাকা দিয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রেশমা যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন ওই বাড়ির কর্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রানা প্লাজা ধসে পড়ার পর ওই দিনই রেশমাকে উদ্ধার করা হয়। এরপর পাশের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি চিকিত্সা নেন।
মিরর-এর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, উদ্ধার হওয়ার সময় রেশমার শারীরিক অবস্থা এবং তাঁর জামা-কাপড়ের পরিচ্ছন্নতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অনুসন্ধানী সাংবাদিক শিশির আবদুল্লাহ বলেন, ‘তাঁকে (রেশমা) দেখে মনে হয়নি যে ১৭ দিন ধরে তিনি ওই বিশাল ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে ছিলেন। তা ছাড়া তিনি জানান, ইট ও ধ্বংসস্তূপ টেনেহিঁচড়ে সরিয়ে তিনি আপশাশে নিহত ব্যক্তিদের পানি সংগ্রহ করে পান করেন। কিন্তু তাঁর হাত বা হাতের নখে এ ধরনের কোনো চিহ্ন ছিল না।’
মিরর-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নিরক্ষর রেশমাকে কয়েক দিন আগে ঢাকার একটি পাঁচতারা হোটেলে চাকরি দেওয়া হয়েছে বিশাল বেতনে। এ উপলক্ষে তাঁকে এক সংবাদ সম্মেলনে হাজির করা হয়। এ সময় সাংবাদিকেরা যখন প্রশ্ন করেন যে উদ্ধারের ঘটনাটি সাজানো ছিল কি না, তখন রেশমা রেগে যান। তিনি বলেন, ‘আমি যেখানে ছিলাম, সেখানে তো আপনারা ছিলেন না। কাজেই আপনাদের কোনো ধারণা নেই।’ এরপর কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের আর কোনো প্রশ্ন করতে দেননি। এমন কথাও শোনা যাচ্ছে যে সাজানো নাটকে রাজি হতে রেশমাকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার লোভও দেখানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত শুক্রবার মিরর-এর সাংবাদিক দিনাজপুরের রানীগঞ্জে রেশমার গ্রামের বাড়িতে যান। এ সময় তাঁর মা জোবেদার কাছে মেয়ের উদ্ধার অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তুললে তিনি বলেন, ‘তাঁর উদ্ধারের ঘটনাটি অলৌকিক, সবাই তাই মনে করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এখন অনেক টাকা। রেশমা নতুন চাকরি পেয়েছে।’
জোবেদা বলেন, ‘ভবনধসের ঘটনাটি জানার পর আমরা খুব চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম। আমি ও আমার স্বামী ঢাকায় চলে যাই। এরপর অন্যদের মতো আমরাও ধসে পড়া ভবনের বাইরে অপেক্ষা করতে থাকি। আর দোয়া করতে থাকি, তাকে যে ভালোয় ভালোয় উদ্ধার করা যায়। কিন্তু আমাদের কোনো দোয়াই কাজে আসছিল না।’
রেশমার মা আরও বলেন, ‘১৭ দিন পর লাউডস্পিকারে ঘোষণা দেওয়া হলো, “জীবিত একজন নারীর সন্ধান পাওয়া গেছে। তাঁর নাম রেশমা।” এ কথা শুনে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। জ্ঞান ফেরার পর অন্যরা আমাকে হাসপাতালে রেশমার কাছে নিয়ে যায়। সে আমাদের সঙ্গে কথা বলল। তার হাতে একটু দাগ ছাড়া আর তেমন কিছুই হয়নি।   সূত্রঃ প্রথমআলো
Share this post :

+ comments + 1 comments

July 2, 2013 at 12:06 AM

মুখ খুললেন এনাম- প্রসঙ্গ রেশমা

http://bdworld21.blogspot.com/2013/07/blog-post_1.html

Post a Comment

Blog Archive

 
Support : Creating Website | N Hassan | Winter Hassan
Copyright © 2013. BD World 21 - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Online World