ক্ষুদে গানরাজ ঝুমা বললেন, ‘ছি! আমার কি বিয়ের বয়স হয়েছে?
ঝুমা বললেন, ছোট বোনের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি। আর ওই ঘটনায় বাড়ি থেকেই পালাই রাগের মাথায়। ঢাকায় বান্ধবীর বাসায় ছিলাম। আমার স্কুলের পাশেই। এমনকী স্কুলের এক স্যারের বাসায় ইফতারের দাওয়াতেও গেছি। কিন্তু তখনও বুঝিনি আমাকে নিয়ে এতসব কান্ড হবে। লজ্জায় মাথা হেট হয়ে যাচ্ছে। রীতিমতো কান্নার সুর ক্ষুদে গানরাজের গলায়। সাহস দিলাম, এ প্রান্ত থেকে। ঝুমা আপনি প্রতিভাবান। একদিন অনেক বড় শিল্পী হবেন। আসলেই মনে হল সাহস পেলেন। বললেন, মা যে এভাবে অপহরণের মামলা করবেন বুঝিনি। সবই ভুল বোঝাবুঝি। মানে? এবার প্রশ্ন করি তাঁকে। জনপ্রিয় এই শিল্পী বলেন, যাকে জড়িয়ে এতসব কথা, পত্রপত্রিকায় লেখালেখি একটা গানের প্রোগ্রামে তাঁর সাথে পরিচয়। এটা সত্যি, তিনি আমাদের বাড়িতে আসতেন। তাঁকে ভাই বলে সম্বোধন করতাম। কিন্তু বিয়ে! বিস্ময়ের ভঙ্গিতে বললেন, ছি! আমার কি বিয়ের বয়স হয়েছে? এত তাড়াতাড়ি বিয়ের কথা কেউ ভাবে? খানিকটা ক্ষুব্ধও তিনি। বললেন, যে কয়দিন বাড়ির বাইরে ছিলাম প্রতিদিন মোবাইল ফোনে খালার সঙ্গে কথা বলেছি। মা’কে চেয়েছিলাম। মা রাগ করে কথা বলেননি। কিন্তু এভাবে যে মামলা-মোকদ্দমায় জড়াতে হবে ভাবনায় ছিল না তাঁর, জানালেন ক্ষুদে গানরাজ।
ঝুমা জানালেন, অপহরণের মামলাটি চলবেনা। ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে। এখন যেভাবে মামলাটি প্রত্যাহার হয় তাঁর মা সেই ব্যবস্থা নেবেন। মিডিয়া যেন তাঁকে এ ব্যাপারে সাহায্য করে সেই কামনাও করলেন তিনি। বললেন, মানুষেরই তো ভুল হয়। আর আমরা না বুঝে একটা ভুলের মধ্যে পড়েছি। সবাই যেন আমাদের পাশে থাকেন। রীতিমতো আঁকুতি জানান জনপ্রিয় এই ক্ষুদে শিল্পী।
ঝুমা বললেন, কিছুক্ষণ পরই লালমনিরহাটের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন তিনি। সেখানে পূর্ব নির্ধারিত গানের অনুষ্ঠান আছে। তিনি চান সবাই যেন তাঁকে দোয়া করে। প্রতিকূলতা কাটিয়ে একদিন অনেক বড় হতে চান ঝুমা। হতে চান অনেক বড় শিল্পী। বললেন, এই চাওয়া কি তাঁর অন্যায়? কি জবাব দেব আমি? শুধু বললাম, দোয়া করি। নিজের গলায়ই ধরে এলো এবার আমার। ফোন রেখে দিলাম।
দারিদ্র, দু:খ, আর কষ্টের মধ্যেই বেড়ে ওঠা ঝুমার। নরসিংদীর মেয়ে সে। পরিবারে দারিদ্র এতটাই যে তার গান করার অপরাধে বাবা তাকে আগুনে পুড়িয়ে মারতে চায়। এরপর বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় তিনি, তার মা ও বোনদের। সেই ঝুমা গাজীপুরের এক শিক্ষকের সহযোগিতায় চ্যানেল আইয়ের ক্ষুদে গানরাজ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তাক লাগিয়ে দেয়। ফার্স্ট রানার হয়। চারিদিকে সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। অসম্ভব প্রতিভা তার। গত কয়েকদিনে সংশ্লিষ্ট অনেককেই একথা বলতে শুনেছি। সেই ঝুমা গত কয়েকদিন পত্রপত্রিকার শিরোনাম ছিলেন নেতিবাচকভাবে। আশুলিয়ার এক বিবাহিত ব্যবসায়ীর সঙ্গে পালিয়ে গেছেন তিনি। বিয়ে করেছেন। এমন খবর প্রকাশিত হয়েছে অনেক গণমাধ্যমে। আবার তার মা নরসিংদী থানায় অপহরণ মামলা করায় ঝুমা অপহৃত এমন খবরও শিরোনাম ছিল অনেক গণমাধ্যমে। প্রকৃত ঘটনা যাইহোক ঝুমা বলছেন, তার একটা ভুল হয়েছে।
একেবারে তৃণমূল পর্যায় থেকে উঠে আসা কঠিন দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত ঝুমাকে আমরা কি একটু সাহায্য করতে পারিনা? পারিনা নেতিবাচক প্রচারণার হাত থেকে বাঁচাতে? তাহলে এই প্রতিভা হয়ত একদিন অনেক, অনেক বেশি আলো ছড়াবেন। দারিদ্রকে জয় করে এগিয়ে যাওয়া যায় আরও একবার সেই উদাহরণ হযে থাকবেন। ঝুমার জন্য শুভ কামনা।
Related Topics: মিডিয়া, ভালোবাসার, celebrity, love, love story
Post a Comment